"সাপ্তাহিক নিয়মিত সাক্ষাতকারে" বোয়ালখালী উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি মোঃ আকরাম হোসেন দুলালের বিশেষ সাক্ষাতকার নিচ্ছেন দৈনিক চট্টগ্রাম সংবাদ এর সম্পাদক এবং প্রকাশক মোহাম্মদ ইউনুস (ইনু)
দৈনিক চট্টগ্রাম সংবাদ: কেমন আছেন?
আকরাম হোসেন দুলাল: আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে এলাকাবাসীর দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
দৈনিক চট্টগ্রাম সংবাদ: অন্তর্বর্তী সরকারের আট মাস হলো। আপনার মূল্যায়ন কী?
আকরাম হোসেন দুলাল: স্বৈরাচারী হাসিনার পতন হওয়ার পর একটা শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। সেই শূন্যতা তো পূরণ হওয়ার দরকার ছিল তাড়াতাড়ি। সেখানে ছাত্র ও অন্যরা মিলে যে এ ধরনের একটা সরকার দাঁড় করিয়েছে, সেটা বাস্তব পরিস্থিতিতে একটা সঠিক কাজ হয়েছে। কারণ, সেই মুহূর্তে সরকার গঠন না করা হলে সেই শূন্যতা পূরণের ক্ষমতা ছিল সামরিক বাহিনীর। দেশে আরেকটা সামরিক শাসন আসত।
দৈনিক চট্টগ্রাম সংবাদ: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে জাতীয় নাগরিক পার্টি নামে নতুন দল গঠিত হয়েছে। এটাকে কীভাবে দেখছেন?
আকরাম হোসেন দুলাল: অল্পবয়স্ক ছেলেপেলে একটা পার্টি করল। তাদের প্রথম কথা হচ্ছে, কীভাবে ক্ষমতায় যাবে। তাদের ভাবখানা এমন যে তারা নির্বাচন করবে এবং নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করবে। প্রশ্ন হলো, তাদের কী পরিচিতি আছে যে লোকে তাদের ভোট দেবেন। স্থানীয় বিবেচনা, রাজনৈতিক বিবেচনা—এসব দেখে লোকে ভোট দেন। তাদের তো স্থানীয় ভিত্তি বলে কিছু নেই। গ্রামাঞ্চলে তাদের রাজনৈতিক পরিচিতিও নেই। প্রচার-প্রচারণার কারণে শহরাঞ্চলে তাদের একটা অবস্থান আছে। নির্বাচনে তাদের খুব বড় জিত হবে, সেটা আমি মনে করি না। তারা মনে করছে যে তারা এমন অবস্থানে আছে যে লোকে ভোট দিয়ে তাদের জিতিয়ে দেবেন। এসব হচ্ছে পরিস্থিতি সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল না থাকার বিপদ। তারা বলছে, সংবিধান পরিবর্তন করতে চায়। কী ধরনের পরিবর্তন চায়, কেন পরিবর্তন চায়, তার বিস্তারিত তো কিছু দেখছি না। একটা পার্টি হয়ে গেল, অথচ তাদের ঘোষণাপত্র, গঠনতন্ত্র নেই এখনো এখন তারা যেভাবে চলছে, সেটা আমার কাছে একটু অদ্ভুত মনে হচ্ছে। এই অভ্যুত্থানের পর নতুন পার্টি হলো। একটা বিরাট জাঁকজমকের সঙ্গে নতুন পার্টির অভিষেক হলো। তারা বড় বড় ইফতার পার্টি দিয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শামিয়ানা খাটিয়ে লোকজনকে ইফতার করিয়েছে। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ইফতার পার্টি দিয়েছে। আমি তো খুব বিস্মিত তাদের এই কার্যকলাপে। এটা যারা করছে, তাদের কতখানি জনসম্পৃক্ততা আছে!!?
দৈনিক চট্টগ্রাম সংবাদ: সংস্কার আগে চান নাকি নির্বাচন আগে?
আকরাম হোসেন দুলাল: হাসিনা হয়তো মনে করতেন, তিনিই ছিলেন সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর। কিন্তু এখানে রবীন্দ্রনাথের সেই ‘পথ ভাবে আমি দেব রথ ভাবে আমি,’ আসলে অন্তর্যামী জানেন কে দেবতা। হাসিনা পালিয়েছেন, তাঁর লোকজন অনেকে পালিয়েছেন। সবাই তো পালাননি। তাঁরা তো এখানে রয়ে গেছেন। তাঁরাই এই দেশের শাসকশ্রেণি। সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ করছেন। ব্যবসা থেকে শুরু করে প্রশাসন, পুলিশ—সব জায়গাতে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। কাজেই সরকারের একটা দুর্বল জায়গা তো রয়েছে। তারা নির্বাচিতও নয়। তাদের নিজস্ব কোনো শক্তিও নেই। হাসিনা চলে যাওয়ার পর দেশে যে একটা নৈরাজ্যিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অবশ্যই নির্বাচন দেওয়া জরুরী। কেননা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নিজস্ব কোন শক্তি নেই, নির্বাচিত সরকারও নয়, কাজেই তারা কি বা সংস্কার করবে?
দৈনিক চট্টগ্রাম সংবাদ: আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস এবং শ্রমিকদের নিয়ে কি ভাবছেন?
আকরাম হোসেন দুলাল: সরকার শ্রমিকের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে না। কারণ, ব্যবসায়ী শ্রেণি তাদের নিয়ন্ত্রণ করছে। গার্মেন্টসে মজুরির আন্দোলনে সরকার সমর্থন দিচ্ছে না। যারা শাসকশ্রেণি রয়েছে, তাদের বিরোধিতা করে সরকার শ্রমিকের মজুরি বাড়াতে পারছে না। আগামী পহেলা মে, মহান মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। পৃথিবীর শ্রমজীবি মেহনতি মানুষের কাছে এ দিনটি একদিকে যেমন খুবই তাৎপর্যময় তেমনি অনেক বেশী আবেগ ও প্রেরণার দিন। আমি একজন শ্রমিক নেতা হিসেবে সবসময় শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কথা বলে আসতেছি। এইবার মে দিবসে গার্মেন্টস এবং কল কারখানার শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি সহ্ প্রত্যেক সেক্টরের শ্রমিকদের অধিকার আদায় করার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক সমাবেশ সফল করার চেষ্ঠা করবো।
দৈনিক চট্টগ্রাম সংবাদ: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ক্লিন ইমেজের প্রার্থী খোজছেন বলে জেনেছি।আপনার মতে চট্টগ্রাম ০৮ আসনে ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি কাকে মনে হয়? এবং কেন?
আকরাম হোসেন দুলাল: অবশ্যই চট্রগ্রাম ০৮ আসনের গণমানুষের নেতা এরশাদ উল্লাহ ভাই। কেননা এরশাদ উল্লাহ ভাই, তার সততার সাথে বিএনপির দুঃসময় থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত চট্রগ্রাম ০৮ আসনের বিপদে আপদে মানুষের পাশে ছিলেন। এরশাদ উল্লাহ ভাইয়ের সৎ মন মানসিকতার জন্য চট্টগ্রাম ০৮ আসনের মানুষ ভালোবেসে উনাকে গণ মানুষের নেতা ভূষিত করেছেন।
দৈনিক চট্টগ্রাম সংবাদ: বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপি কার হাতে নিরাপদ বলে মনে করেন?
আকরাম হোসেন দুলাল: শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নীতি ও আদর্শ মেনে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা মেনে বোয়ালখালীতে সৎ এবং নিষ্ঠার সাথে রাজনীতি করেন শওকত আলম শওকত ভাই। একজন প্রকৃত পক্ষে মানুষ। আমি মনে করি বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপি নিরাপদ শওকত আলম শওকত ভাইয়ের হাতে।
দৈনিক চট্রগ্রাম সংবাদ: ধন্যবাদ আকরাম হোসেন দুলাল ভাই। অনেক ব্যস্ততার সময়ের মধ্যে দৈনিক চট্টগ্রাম সংবাদ কে সময় দেওয়ার জন্য। ভালো থাকবেন।
আকরাম হোসেন দুলাল: ধন্যবাদ... আপনিও ভালো থাকবেন।