পার্বত্য চট্টগ্রামভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর জন্য ইউনিফর্ম তৈরির কাপড় সরবরাহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চট্টগ্রামের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক সাংসদ ও সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের ছোট ভাই তারিকুল ইসলামসহ চারজনকে। তারিকুল ওয়েল ফেব্রিক্স এন্ড ওয়েল কম্পোজিট নিট লিমিটেডের পরিচালক।
সোমবার (২ জুন) রাত ৯টার দিকে চান্দগাঁও থানার পুলিশ ‘ওয়েল ফেব্রিক্স এন্ড ওয়েল কম্পোজিট নিট লিমিটেড’ কারখানা থেকে রোলিং করা কাপড়সহ একটি গাড়ি জব্দ করে। প্রতিষ্ঠানটি ছালাম পরিবারের মালিকানাধীন ওয়েল গ্রুপের সহযোগী। এ সময় তারিকুল ইসলাম ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম, জামালুল ইসলাম ও মো. আতিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন জানান, কারখানাটির কেএনএফ-এর ইউনিফর্ম তৈরির কাজে সংশ্লিষ্ট থাকার তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। বিষয়টি তদন্তাধীন এবং গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
এই ঘটনায় ইকবাল হোসেন নামে একজন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, চলতি বছরের মার্চ মাসে গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দার নামের দুই ব্যক্তি কেএনএফ সদস্য মংহ্লাসিন মারমার কাছ থেকে প্রায় দুই কোটি টাকার চুক্তিতে ইউনিফর্ম তৈরির দায়িত্ব নেন। কাপড় সরবরাহ করে কেএনএফ সদস্যরা, আর মে মাসে সেই ইউনিফর্ম হস্তান্তরের কথা ছিল।
এ ঘটনার পর গত ২৭ মে এবং ১ জুন চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন গার্মেন্টস কারখানায় অভিযান চালিয়ে মোট ২৬ হাজারের বেশি ইউনিফর্ম জব্দ করা হয়। অভিযানে ‘নুর ফ্যাশন অ্যান্ড গার্মেন্টস’ কারখানার মালিক মতিউর রহমান ও ‘রিংভো অ্যাপারেলস’ মালিক সৈয়দা সালেহা পারভীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে একজনের ৫ দিনের এবং অপরজনের ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম ওয়েল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায় ৯ বছর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান ছিলেন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনি চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে এসব পোশাক আসলে কেএনএফ সদস্যদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল কিনা, তা নিশ্চিত করা হবে। তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে।